শেখ তানভীর বারী হামিম বাংলাদেশে উদীয়মান আলোচিত ছাত্রনেতাদের একজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী এই ছাত্রদলনেতা উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন ২০২৪ সালে। বর্তমানে তিনি একই বিভাগে স্নাতকোত্তরে অধ্যায়নরত এবং ২০২০ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবি জসীমউদ্দীন হল ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক(যুগ্ম সম্পাদক পদমর্যাদা) দায়িত্ব পালন করছেন।এর পূর্বে তিনি খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে ২০১৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।
মেধাবী এই ছাত্রদলনেতা ২০০০ সালের ১৮ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন খুলনা শহরে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। তিনি খুলনা জিলা স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০১৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ও খুলনা সরকারি সিটি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০১৮সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। উভয়ই পরীক্ষায় তিনি জিপিএ ৫.০০ পেয়ে মেধার সাক্ষর রাখেন।স্কুলজীবনে তিনি খুলনা জিলা স্কুল ঐতিহ্যবাহী ব্যান্ডদলের কো-ব্যান্ডমাস্টার এবং খুলনা জিলা স্কুল হ্যান্ডবল দলের ভাইস ক্যাপ্টেন ছিলেন।
স্কুলজীবন থেকে ছাত্রনেতা হওয়ার প্রবল বাসনা থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াই ছিলো তার একমাত্র লক্ষ্য।তাই উচ্চ মাধ্যমিক শেষেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় “ঘ” ইউনিটের প্রস্তুতি নেন।এ সময়ই শুরু হয় নিরাপদ সড়ক আন্দোলন। খুলনায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে তার উপর হুলিয়া জারি হলে এক রাতেই তিনি ঢাকা চলে আসেন। তখন ভর্তি পরীক্ষার আর মাত্র ২২ দিন বাকি ছিলো। ঢাকা এসে নতুন পরিবেশে প্রস্তুতি অনেকটাই বিঘ্নিত হয়। পরবর্তীতে ঘ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় তিনি প্রথমে ২৯৩২তম স্হান অর্জন করেন। সে পরীক্ষাটি প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে বাতিল হয় এবং দ্বিতীয়বারের মতন ভর্তি পরীক্ষা সম্পাদন হয়। সেখানে তিনি ১১৩২তম স্হান অর্জন করেন এবং উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হন। উক্ত বিভাগের ক্রিকেট দলে ২০২৪ সালে তিনি অধিনায়কত্ব করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তানভীর বারী হামিম-এর শিক্ষার্থীবান্ধব যত কাজঃ
১ম বর্ষ থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন কর্মী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ১ম বর্ষ থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি – ঢাবি থেকে ৭ কলেজ অধিভুক্তি বাতিলের দাবি আন্দোলনে
তিনি সম্মুখ সারিতে ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল আহুত সকল আন্দোলন সংগ্রামে তানভীর বারী হামিমের অংশগ্রহণ ছিলো চোখে পড়ার মতন। ২৮ অক্টোবর,২০২৩ পরবর্তী সময়ে সকল হরতাল-অবরোধ সফলে সাহসী ভূমিকা রাখেন এই ছাত্রনেতা। সাম্প্রতিক জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে
তিনি ১০ জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে শাহবাগে প্রথম ৩ হাজার পানি বিতরণ করেন। ১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কফিন মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে এবং গায়েবানা জানাযায় অংশগ্রহণ করে তিনি আলোচনায় আসেন। ১৭ জুলাইয়ের পর থেকে তিনি ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় আন্দোলন সংগঠিত করেন এবং ৫আগস্ট পর্যন্ত খুলনায় মেধা দিয়ে আন্দোলনকে ও ঢাকায় রাজপথে নিজে অংশগ্রহণ করেন।
২০২৪ সালে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন কমল মেডিএইড,ঢাবি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অসুস্থ হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে টেলিমেডিসিন সেবা ও গুরুতর অসুস্থ শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলের কক্ষে ডেলিভারি চার্জ ছাড়াই ওষুধ পৌঁছে দিয়ে থাকে সংগঠনটি। এছাড়াও সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ টি হলের অংশগ্রহণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রীতি আন্তঃহল শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, কলাভবন ও সামাজিক বিজ্ঞান ভবন গার্লস কমনরুমে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন ও শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প, মেয়েদের হলে হলে স্বাস্হ্যসেবা ক্যাম্প, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুরআন তিলাওয়াত আয়োজন করে সংগঠনটি।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের লিফটের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২৬ জন শিক্ষার্থী প্রায় ৩০ মিনিট আটকা পড়ার ঘটনা ঘটে। তারই প্রেক্ষিতে লিফটের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা ও লিফটম্যানের দায়িত্ব পালনে জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণসহ ৪ দফা দাবি জানায় তিনি। কলাভবনের ওয়াশরুমসমূহে পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে লিকুইড হ্যান্ডওয়াশ ব্যবস্হা করা; লিফটের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা ও লিফটম্যানের দায়িত্ব পালনে জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং কলাভবনের পরীক্ষা কেন্দ্রসমূহে নষ্ট এসি সংস্কার ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা সর্বমোট ৪ দফা দাবি ২৮এপ্রিল,২০২৫,সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খানের কাছে জমা দেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতে ডাকসুতে ‘প্রতিবন্ধী ক্ষমতায়ন বিষয়ক সম্পাদক’ পদ সৃষ্টিসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছেন তানভীর বারী হামিম। ২২ জুন,২০২৫,রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. সায়মা হক বিদিশা-র কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন।অন্যান্য দাবিগুলো যথাক্রমে- ঢাবির প্রতিটি ইনস্টিটিউট, হল ও ফ্যাকাল্টিতে র্যাম্প ও ভয়েস রিকগনিশন সুবিধাসহ প্রবেশগম্য অবকাঠামো নিশ্চিত করা। ড. মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য নিচতলায় আলাদা চিকিৎসা সেবা চালু করা। প্রশাসনিক ভবনে প্রতিবন্ধীদের সেবা নিশ্চিত করতে নিচতলায় আলাদা সার্ভিস সেল স্থাপন। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী ও নিরাপদ ওয়াশরুম ব্যবস্থা। সচেতনতা বৃদ্ধিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীদের জন্য প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক সেমিনার আয়োজন। প্রতিবন্ধীদের দ্বারা পরিচালিত ক্লাব গঠন এবং টিএসসিতে আলাদা অফিস কক্ষ বরাদ্দ। স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং ও উচ্চশিক্ষায় আর্থিক ও অ্যাকাডেমিক সহায়তা নিশ্চিতকরণ।
এছাড়াও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তঃবাস রূট ফুটসাল টূর্নামেন্ট আয়োজনে কাজ করে চলেছেন এ ছাত্রনেতা। সাম্প্রতি, ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের বাসে ঢাবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হলে তিনি তাৎক্ষণিক আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা নিশ্চিতে উত্তরা হাসপাতালে চিকিৎসক পাঠান এবং সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের দ্রুত সোপর্দ করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের
আইজিপিকে ফোন করেন
ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিকরণের জন্য ও বিভিন্ন স্হানে প্রক্টরিয়াল টীমের গাফিলতি নিয়ে ভিডিও প্রকাশ করে তা সমাধানে চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মাঠের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট খেলার যথাযথ পরিবেশ না থাকায় নিজে সে স্হানে যেয়ে তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে ভিডিও প্রকাশ করলে পরবর্তীতে তা সংস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
Valiant freedom fighters and Bangladeshi Nationalists founded the party under the leadership of President Ziaur Rahman in 1978